Astagram Haor, Kishoreganj

অষ্টগ্রাম হাওর কিশোরগঞ্জ

Kishoreganj

Shafayet Al-Anik

·

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

অষ্টগ্রাম হাওর কিশোরগঞ্জ পরিচিতি

অষ্টগ্রাম হাওর কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম (অষ্টগ্রাম) উপজেলায় অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে অষ্টগ্রামের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। উত্তরে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামিন ও ইটনা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছির নগর, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর ও নিকলী উপজেলা। হাওরের কেন্দ্রে অষ্টগ্রাম অবস্থিত।
বর্ষা ঋতু অষ্টগ্রাম হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। যতদূর চোখ যায় জল আর জল। পানির মাঝে ভেসে উঠছে সুন্দর ছোট গ্রামগুলো। ঝড়ো হাওয়া, নাবিকদের গান, জেলেদের ব্যস্ততা, ছোট ছোট নৌকায় মানুষের আনাগোনা, সব মিলিয়ে চারপাশটা দেখার মতো। তবে শুধু বর্ষা নয়, পানি কমলে এই হাওর জেগে ওঠে ভিন্ন রূপে। ভিন্ন স্বাদ পেতে, আপনি শীতকালেও কিশোরগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান অষ্টগ্রাম হাওরে ঘুরে আসতে পারেন।

অষ্টগ্রাম হাওর যাবার উপায়

অষ্টগ্রাম ও অষ্টগ্রাম হাওরে সরাসরি যাওয়ার সুযোগ নেই। ভেঙে যেতে হবে। আবার বর্ষায় যাওয়ার পথ এক রকম, শীতে যাওয়ার পথ আলাদা। মূলত অষ্টগ্রামে যাওয়ার জন্য চারটি পথ রয়েছে।
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থেকে নৌকায় অষ্টগ্রাম। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে নৌকায় অষ্টগ্রাম। কিশোরগঞ্জ থেকে মিঠামইন হয়ে অষ্টগ্রাম। কিশোরগঞ্জের নিকলী থেকে অষ্টগ্রাম। আপনি কোন সময় যাবেন এবং কোন পথটি আপনার জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক তা আপনার পরিকল্পনা করা উচিত।
মিঠামিন হয়ে বাজিতপুর থেকে অষ্টগ্রাম বা কিশোরগঞ্জ শহর থেকে অষ্টগ্রাম যাওয়ার পথটি বর্তমানে জনপ্রিয় হওয়ায় এটি সহজ এবং সব মৌসুমেই যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের ট্রেন ধরে বাজিতপুরে নেমে পড়ুন। বাজিতপুর স্টেশন থেকে দিঘিরপাড় ঘাটে যান। সেখান থেকে শুষ্ক মৌসুমে ইজিবাইকে করে ফেরি পার হয়ে অষ্টগ্রাম যাওয়া যায়। অথবা বর্ষাকালে ফেরি বন্ধ থাকলে স্থানীয় নৌকা বা রিজার্ভ বোটে করে অষ্টগ্রাম যেতে পারেন।
আপনি যদি বাসে আসেন, ঢাকা থেকে বাজিতপুর পর্যন্ত বিআরটিসি বাস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া ঢাকার গোলাপবাগ থেকে কিশোরগঞ্জগামী যেকোনো বাসে নেমে বাসস্টপ থেকে বাজিতপুরে সিএনজি পেতে পারেন। বাজিতপুর বাজার থেকে ইজিবাইক বা সিএনজি করে দিঘির পাড় চলে আসুন।
অথবা যে কোন ট্রেনে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে যান, রিকশায় যান ভৈরব বাজারে। সেখান থেকে লোকাল সিএনজি করে বাজিতপুর পৌঁছানো যায়।
কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হয়ে অষ্টগ্রাম যেতে চাইলে কিশোরগঞ্জ থেকে বালিখোলা ঘাটে চলে আসুন। শুষ্ক মৌসুমে আপনি ইজিবাইক/মোটরসাইকেলে ফেরি পার হয়ে মিথামাইন যেতে পারেন। সেখান থেকে হাওর রোড হয়ে ইজিবাইক/মোটরবাইকে অষ্টগ্রাম যাওয়া যায়।
বর্ষাকালে ফেরি বন্ধ থাকলে স্থানীয় নৌকা বা রিজার্ভ বোটে করে অষ্টগ্রাম যেতে পারেন।

অষ্টগ্রাম হাওরে যা দেখবেন

আপনি যতক্ষণ নৌকায় আছেন ততক্ষণ আপনি এটি পছন্দ করবেন নিশ্চিত। হাওরের রূপ দেখার পাশাপাশি মিটামাইন অষ্টগ্রাম হাওর রোডেও একটি বিকেল কাটানো যায়।
অষ্টগ্রাম থানা সদরে সুলতান ও মুঘল স্থাপত্যের মিশ্রণে নির্মিত পাঁচটি গম্বুজ বিশিষ্ট 400 বছরের পুরানো কুতুবশাহ মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদের সৌন্দর্য সবাইকে আকৃষ্ট করে।
পূর্ণ পূর্ণিমায় হাওয়ার যেতে পারলে মনে রাখার মতো রাত হতে পারে। আপনি একটি নৌকায় ভাসতে ভাসতে চাঁদের আলোতে ভিজতে পারেন অথবা আপনি আপনার পছন্দের জায়গা খুঁজে ক্যাম্পিং করতে পারেন। ক্যাম্পিং এর জন্য ঢাকা থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন তাঁবু, হ্যামক ইত্যাদি অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে।

অষ্টগ্রামের হোটেল ও রিসোর্ট

অষ্টগ্রামে থাকার জন্য খুব একটা ভালো মানের আবাসিক হোটেল নেই। প্রথম ও প্রধান স্থান জেলা পরিষদ ডাক বাংলো। রুম ভেদে 300 থেকে 1500 টাকা ভাড়া। ডাকবাংলোতে থাকতে চাইলে আগে থেকে যোগাযোগ করা ভালো। এই নম্বরে কল করুন 0171-0291225 / 01914-975389 এবং কেয়ারটেকারের সাথে কথা বলে সবকিছু ঠিক করুন। অষ্টগ্রাম বাজারে রংধনু আবাসিক হোটেল (01916-122499), মৌ-মিতু আবাসিক হোটেল (01715-345142) এবং ঝলক আবাসিক হোটেল (01973-278431) নামে তিনটি মানসম্পন্ন আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম ভেদে ভাড়া পড়বে 150 থেকে 600 টাকা।
আর ক্যাম্পিং করতে চাইলে করতে পারেন। তবে ক্যাম্পিংয়ের জন্য একটি ভাল জায়গা বেছে নেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখুন। প্রয়োজনে স্থানীয়দের সহায়তা নিন।

কোথায় খাবেন / কি খাবেন

নিজে রান্না করতে চাইলে স্থানীয় বাজার থেকে কিনে সকালে রান্না করতে পারেন। অষ্টগ্রাম বাজারে অবস্থিত নাজির বা প্রভাতী হোটেলে হাওরের তাজা মাছের তরকারি পাওয়া যায় বিভিন্ন গ্রেডে। টাটকা ধরা মাছের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। অষ্টগ্রামে বাংলাদেশের সেরা কিছু পনির রয়েছে তবে এর জন্য আপনাকে অন্তত এক বা দুই দিন আগে স্থানীয় পনির বিক্রেতাদের সাথে কথা বলতে হবে এবং পরিমাণটি জানাতে হবে। আপনি যদি শীতকালে অষ্টগ্রামে যান, আপনি এখনকার বিখ্যাত মুরালি ব্যবহার করে দেখতে পারেন, যা প্রায় 10 ইঞ্চি লম্বা।

ভ্রমণ সতর্কতা

ক্যাম্পিং এর ক্ষেত্রে অষ্টগ্রামের মূল ভূমি অর্থাৎ অষ্টগ্রাম বাজারের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। যদি 15 বা তার বেশি লোক যায়, তাহলে স্থানীয় থানায় ওসির কাছে রিপোর্ট করতে হতে পারে, নিরাপত্তার জন্য তথ্য দিয়ে পুলিশকে সাহায্য করতে হবে। যদি নৌকায় রাত কাটানোর ইচ্ছা থাকে, তাহলে যতটা সম্ভব কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন, বিশেষ করে স্থানীয় একজনের সাথে।

Related Post

সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি

সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি

অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে ...

শাফায়েত আল-অনিক

৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

কুতুব শাহ মসজিদ

কুতুব শাহ মসজিদ

কুতুব মসজিদ বা কুতুব শাহ মসজিদ কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার কেন্দ্রে অবস্থিত। এই মসজিদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে কা ...

শাফায়েত আল-অনিক

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

এগারোসিন্দুর দুর্গ

এগারোসিন্দুর দুর্গ

এই দুর্গটি কিশোরগঞ্জ থেকে 22 কিলোমিটার এবং পাকুন্দিয়া উপজেলা থেকে 8 কিলোমিটার দূরে এগারসিন্দুর গ্রামে অবস্থিত। এগারসিন্ ...

শাফায়েত আল-অনিক

৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

logo CholoZai

CholoZai is an easier hotel booking platform in Bangladesh, We are trying to making travel simple and accessible for everyone. Choose CholoZai for a hassle free hotel booking experience.

Need Help ?

We are Always here for you! Knock us on Whatsapp (10AM - 10PM) or Email us.