Mir Mosharraf Hossain Memorial

মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিসৌধ

Rajbari

Shafayet Al-Anik

·

১৫ জুলাই, ২০২৪

মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিসৌধ পরিচিতি

বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় মহাকাব্য বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মোশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়া গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। মীর মোশাররফ হোসেনের বাবা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে থাকতেন। জানা যায়, মীর মোশাররফ হোসেনের পূর্বপুরুষ সৈয়দ সাদুল্লাহ প্রথমে বাগদাদ থেকে দিল্লীতে আসেন এবং পরে ফরিদপুর জেলার সাকরা গ্রামে বসতি স্থাপন করেন।
নিজ বাড়ি থেকে শুরু করে মীর মশাররফ হোসেনের শিক্ষাজীবন কেটেছে কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। মীর মশাররফ হোসেন তাঁর পৈত্রিক বাসভবন থেকে তাঁর জীবনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর মোট বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৩৭টি। তিনি শুদ্ধ বাংলায় একে একে বিভিন্ন কালজয়ী গদ্য, কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক ও উপন্যাস লিখেছেন। সে সময় 'জমিদার দর্পণ' নাটকের জন্য সেরা নাট্যকারের মর্যাদা পান।
মীর মশাররফ হোসেনের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ 'বিষাদ সিন্ধু' বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। বাংলার মুসলিম সমাজে তাঁর এই সাহিত্য ধর্মগ্রন্থের মতোই গুরুত্ব দিয়ে পঠিত হয়। ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পদ্মদীতে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মীর মোশাররফ হোসেন। স্ত্রী কুলসুমের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
মীর মোশাররফ হোসেনের স্মৃতি রক্ষার্থে ২০০১ সালে মীর মোশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রায় দুই একর জায়গার উপর আড়াই মিলিয়ন টাকা ব্যয়ে নির্মিত মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি জাদুঘরটি 2005 সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রে জাদুঘর, 100 আসন বিশিষ্ট সেমিনার রুম, অফিস, লাইব্রেরি, গেস্ট রুম, রিসেপশন রুম, ডাইনিং রুম, রান্নাঘর এবং টয়লেট রুম। আজকাল অনেক দর্শনার্থী এই স্মৃতিসৌধ দেখতে আসেন।
সময়: মীর মোশাররফ হোসেন স্মৃতিসৌধ শুক্র ও শনিবার সহ সকল সরকারি ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার গাবতলী থেকে রাবেয়া, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, রাজবাড়ী পরিবহন, সপ্তবর্ণ, সৌদিয়া বাসে পদ্মা সেতু পার হয়ে রাজবাড়ী যেতে জনপ্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা। এছাড়া ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজবাড়ী যাওয়া যায়। ট্রেনের ভাড়া সীট প্রতি ৩৪০ থেকে ৭৮২ টাকা। রাজবাড়ী জেলা শহর থেকে অটোরিকশা রিজার্ভ করে সরাসরি মীর মোশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রে যেতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

রাজবাড়ী জেলায় কয়েকটি সরকারি ডাক বাংলো এবং বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- হোটেল পার্ক, কেন্টন চাইনিজ হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ, গুলশান বোর্ডিং, প্রাইম হোটেল, পাংশা ডাক বাংলো, বালিয়াকান্দি ডাক বাংলো, গোয়াল্যান্ড ডাক বাংলো।

কোথায় খাবেন

মীর মোশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থা নেই। পদমদী থেকে 2 কিমি দূরে আনন্দবাজারে গড় মানের কিছু হোটেল আছে। কিন্তু রাজবাড়ীতে বিভিন্ন মানের খাবার হোটেলে আপনার প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পারেন। এছাড়াও পান বাজারের ভাদু শাহের দোকানে চমচম, রেলগেটে হায়রা শাহের চপ এবং ঢালাই পট্টিতে কুলফি মালাই অন্যান্য খাবারের মধ্যে চেষ্টা করুন।
ফিচার ইমেজঃ চৌধুরী সামিউল কাদের

Related Post

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের লাল ভবনটি প্রায় দেড় শ বছরের পুরনো। এই প্রাচীন ঐতিহাসিক লাল ভবনটি রাজবাড়ী জেলার অন্যত ...

শাফায়েত আল-অনিক

২৯ আগস্ট, ২০২৪

কোল্লান ধিগি রাজবাড়ী

কোল্লান ধিগি রাজবাড়ী

রাজবাড়ী জেলার নবাবপুর ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামের পাশে কল্যাণ ঝিগি অবস্থিত। আজ বিশাল লেকটি সমতল বিলে রূপান্তরিত হলেও লেক ...

শাফায়েত আল-অনিক

৮ জুলাই, ২০২৪

জোড় বাংলা মন্দির

জোড় বাংলা মন্দির

রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া গ্রামে দুটি মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত। আর এই মন্দিরের নাম জ ...

শাফায়েত আল-অনিক

২৫ জুলাই, ২০২৪

logo CholoZai

CholoZai is an easier hotel booking platform in Bangladesh, We are trying to making travel simple and accessible for everyone. Choose CholoZai for a hassle free hotel booking experience.

Need Help ?

We are Always here for you! Knock us on Whatsapp anytime or Call our Hotline (10AM - 10PM).