বান্দরবান শহর থেকে কেওক্রাডং যেতে হলে প্রথমে রুমা বাজারে যেতে হবে। তারপর রুমা বাজার থেকে বগালেক হয়ে কেওক্রাডং। বান্দরবান থেকে একদিনে কেওক্রাডং পৌঁছানো একটু কঠিন হবে। সাধারণত পর্যটকরা প্রথম দিন বগালে এক রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে কেওক্রাডং যান। বগালেক পরিদর্শন এবং অবস্থান আপনার কেওক্রাডং ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করে তুলবে।
বান্দরবান থেকে রুমা বাজারের দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। রুমা বাজারে লোকাল বাস বা চান্দের কার/জীপে যাওয়া যায়। বাসে যেতে হলে বান্দরবানের রুমা বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। সেখান থেকে ১ ঘণ্টা পর বাস ছেড়ে যায় রুমার উদ্দেশ্যে। ভাড়া জনপ্রতি 120 টাকা, সময় লাগবে প্রায় 3 ঘন্টা। গ্রুপে গেলে জীপ/চান্দরে রুমা বাজার যাওয়া যায়। একটি গাড়ি 10-15 যেতে পারে। বান্দরবান শহরের জিপ স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া 3000-4000 টাকা। জিপে করে গেলে প্রায় ২ ঘন্টা লাগবে।
রুমা বাজারে পৌঁছে কেওক্রাডং যাওয়ার জন্য গাইডের ব্যবস্থা করতে হবে। গাইড নেওয়া বাধ্যতামূলক। গাইড সোসাইটির রেজিস্টার্ড গাইড আছে, তাই কাউকে ঠিক করা উচিত। গাইডের খাবারের খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। কেওক্রাডং যাওয়ার অনুমতি যাত্রার আগে রুমা বাজার আর্মি ক্যাম্প থেকে নিতে হবে। অনুমতির জন্য সমস্ত ভ্রমণকারী সদস্যদের পরিচয় লিখিতভাবে জমা দিতে হবে। গাইড আপনাকে এই কাজগুলো করতে সাহায্য করবে। আর অবশ্যই মনে রাখবেন বিকাল ৪টার পর রুমাবাজার থেকে বগালেক যাওয়া নিষেধ। রুমাবাজার থেকে আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস কিনুন। বগালেক এবং কেওক্রাডং যাওয়ার পথে কিছু উপজাতীয় দোকান আছে, কিন্তু সেখানে আপনার যা প্রয়োজন তা নাও পেতে পারেন।
রুমাবাজার থেকে বগালেকের দূরত্ব ১৭ কিমি। অনুমতি নেওয়ার পর রুমাবাজার থেকে ল্যান্ড ক্রুজার জীপ বা চান্দের গাড়ি ভাড়া করতে হবে। একটি গাড়িতে 8-15 জন যেতে পারে। এসব কাজের জন্য গাইডের সাহায্য নিতে পারেন। আপনার যা প্রয়োজন তা গাইডকে জানালে সাধারণত এটির যত্ন নেওয়া হবে। রুমা থেকে বগালেক পর্যন্ত ল্যান্ডক্রুজারের রিজার্ভ ভাড়া 1800 টাকা, চাঁদের গাড়ি ভাড়া 2000 টাকা। আপনার যদি কিছু সদস্য থাকে তবে আপনি অন্যান্য দলের সাথে কথা বলতে পারেন এবং একসাথে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেন। অথবা টিকিট কিনে লোকাল বাসে যেতে পারেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় স্থানীয় চাঁদের গাড়ি আসা-যাওয়া করে। বগালেক পর্যন্ত লোকাল ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা।
বগালেক পৌঁছে সেখানে সেনা ক্যাম্পে রিপোর্ট করুন। সেই রাতে বগালেকে রওনা হলে পরদিন ভোরে ৩-৪ ঘণ্টা হেঁটে (ট্র্যাকিং) করে কেওক্রাডং এর চূড়ায় পৌঁছানো যায়। বগালেক থেকে কেওক্রাডং পর্যন্ত পুরো রাস্তা হেঁটে যেতে হয়। পার হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি খাড়া পাহাড় আছে। আপনি চাইলে পরদিন বগালেক, রুমা বাজার হয়ে বান্দরবান হয়ে কেওক্রাডং পৌঁছাতে পারেন। অথবা ওই দিন কেওক্রাডং থেকে নেমে বগালে এসে দিনের বেলা রুমা হয়ে বান্দরবান পৌঁছাতে হবে। তবে কেওক্রাডং পাহাড়ের চূড়ায় এক রাত থাকাই ভালো। বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ পর্বত থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখার সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়।
বিঃদ্রঃ বর্তমানে রাস্তা ভালো থাকলে গাড়িতে করে কেওক্রাডং যাওয়া যায়। তবে যাওয়া সম্ভব হবে কিনা তা নির্ভর করবে রাস্তা ভালো কি না তার ওপর।