Birshreshtha Mostafa Kamal Monument

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতিসৌধ

Brahmanbaria

Shafayet Al-Anik

·

১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতিসৌধ পরিচিতি

মোহাম্মদ মোস্তফর কামাল ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম হাজীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিভোর মোস্তফা কামাল ১৯৬৭ সালে সেনা সদস্য হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। প্রশিক্ষণ শেষে কুমিল্লায় ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মজীবন শুরু করেন। 1971 সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ গোলযোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেটে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট পাঠায়। পাকিস্তানিদের এই ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে মেজর শাফায়াত জামিল কিছু বাঙালি সৈন্যের সাথে মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সমস্ত পাকিস্তানি অফিসার ও সৈন্যদের গ্রেপ্তার করে এবং অ্যান্ডারসন খালের ধারে আশুগঞ্জ, উজানীশ্বর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নেয়। ১৪ এপ্রিল, পাকিস্তান মুক্তিবাহিনীর ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিরক্ষা অবস্থানে ত্রিমুখী আক্রমণ শুরু করে। এ সময় আলফা কোম্পানির ২য় প্লাটুনের সেকশন কমান্ডার মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল গঙ্গাসাগর প্রতিরক্ষা অবস্থানের দারুইন গ্রামে মোতায়েন ছিলেন।
17 এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী আবার প্লাটুন আক্রমণ করে। ১৮ এপ্রিল একদল পাকিস্তানি বাহিনী পেছন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে মুক্তিবাহিনী দারুইল গ্রাম থেকে আখাওড়া রেলস্টেশনের দিকে পিছু হটার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তার জন্য পিছু হটতে অবিরাম কাভারিং ফায়ার দরকার ছিল। বীর সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা নিজেই তার কমরেডদের নিরাপদে চলে যেতে বলে আগুন ঢেকে দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে মোস্তফা কামালের এলএমজির গোলাবারুদ ফুরিয়ে যায় এবং তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। এরপর তাকে পাকিস্তানি সেনারা নির্মমভাবে হত্যা করে। দারুইল গ্রামের মানুষ শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতার সাথে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতিসৌধ উপহার দেন। অসীম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে 'বীরশ্রেষ্ঠ' উপাধিতে ভূষিত করে।
ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়ার দারুইন গ্রামের মানুষ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের স্মৃতি রক্ষা করে চলেছেন। যেখানে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন সেখানে একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে।

কিভাবে যাবেন

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধি দেখতে হলে যেতে হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা থেকে তিন মাইল দূরে দারুইন গ্রামে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে আখাউড়ার দূরত্ব প্রায় ২৩ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে যেতে পারেন। বাসে গেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছে সেখান থেকে সিএনজি নিন। তবে ঢাকা থেকে ট্রেনে সরাসরি আখাউড়া রেলস্টেশনে যাওয়াই ভালো। ট্রেনের টিকিটের ভাড়া ক্লাস ভেদে জনপ্রতি ১৪০ টাকা থেকে ৫৭৫ টাকা হবে। এছাড়া আখাউড়ায় থামে চট্টগ্রামগামী যে কোনো ট্রেনে করে আপনি আখাউড়ায় পৌঁছাতে পারেন।
আখাউড়া থেকে স্থানীয় পরিবহনে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের দারুইন গ্রামে যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন

আখাউড়ায় কিছু শালীন আবাসিক হোটেল আছে। এছাড়া আপনি চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে রাত্রিযাপন করতে পারেন।

কোথায় খাবেন

সাথে কিছু শুকনো খাবার নিতে পারেন। ভালো কিছু খেতে চাইলে এসে খেতে হবে। আখাউড়া বাজারে নাইন স্টার গরুর খিচুড়ি বিখ্যাত।
ফিচার ইমেজঃ রায়হান রানা

Related Post

হরিপুর জমিদার বাড়ি

হরিপুর জমিদার বাড়ি

হরিপুর জমিদার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ভবন। প্রায় 5 একর লাল ...

শাফায়েত আল-অনিক

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঘাগুটিয়া পোদ্দো বিল

ঘাগুটিয়া পোদ্দো বিল

বাংলাদেশে একসময় অনেক জায়গায় পদ্ম ফুল দেখা গেলেও দিন দিন কমছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্র ...

শাফায়েত আল-অনিক

১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

আবি রিভার পার্ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া

আবি রিভার পার্ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া

আবি রিভার পার্ক, জেলার আকর্ষণীয় বিনোদন কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দক্ষিণ প্রান্তে ভাদুগড়ে কুরুলিয়া খালের (এ ...

শাফায়েত আল-অনিক

২৬ নভেম্বর, ২০২৪

logo CholoZai

CholoZai is an easier hotel booking platform in Bangladesh, We are trying to making travel simple and accessible for everyone. Choose CholoZai for a hassle free hotel booking experience.

Need Help ?

We are Always here for you! Knock us on Whatsapp (10AM - 10PM) or Email us.