Alamdanga Boddhovumi Chuadanga

আলমডাঙ্গা বৌদ্ধভুমি চুয়াডাঙ্গা

Chuadanga

Shafayet Al-Anik

·

২৬ জুলাই, ২০২৪

আলমডাঙ্গা বৌদ্ধভুমি চুয়াডাঙ্গা পরিচিতি

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা বৌদ্ধভূমি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মম গণহত্যার স্থান হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা করে এই বধ্যভূমিতে সমাহিত করা হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই কসাইখানায় শতাধিক মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড় পাওয়া গেছে। 2012 সালে, তরুণ প্রজন্মের কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরতে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ ও কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে কুমার নদীর ওপর লাল সেতুর দুই পাশে সামরিক ক্যাম্প ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনারা প্রথম জানতে পারে চুয়াডাঙ্গাকে অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে নির্ধারণ করে চুয়াডাঙ্গার সাধারণ জনগণের ওপর অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
পরে মুজিবনগরে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠান হয়। সে সময় পাকসেনারা আলমডাঙ্গা ও কালিদাসপুরে লাল সেতু দিয়ে চলাচলকারী ট্রেন থামিয়ে নিরীহ যাত্রীদের অপহরণ করে এবং শত শত নারী-পুরুষকে নির্যাতন ও হত্যা করে লাশ দাফন করে। একাত্তরের জুনের শেষ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারকীয় নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক-ওয়াপদা ভবন সীমানার কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি হলুদ খালাসি বাড়ি ছিল, যেটি ‘টর্চার সেল’ নামে পরিচিত ছিল। এই জায়গায় কসাইখানা কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়।
আলমডাঙ্গা কসাইখানার দেয়াল ডিজাইন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা। কসাইখানার ভেতরে শহীদদের ভাস্কর্য এবং 1757 থেকে 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধের সচিত্র ইতিহাস জাদুঘরে রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

কিভাবে যাবেন

চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, রয়েল, পূর্বাশা, মেহেরপুর, জেআর এবং শ্যামলী পরিবহনের বাসে ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চুয়াডাঙ্গা যাওয়া যায়, যার দাম ৬৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা। আবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চুয়াডাঙ্গা যাওয়া যায়। সুন্দরবন, চিত্রা ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন। ক্লাস ও স্ট্যান্ডার্ড ভেদে এসব ট্রেনের ভাড়া হবে ৪৬৫ টাকা থেকে ১,৫৯৩ টাকা। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে পৌঁছে আপনি কুষ্টিয়াগামী বাসে আলমডাঙ্গা যেতে পারেন। আলমডাঙ্গা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে কালিদাস ইউনিয়নের লালব্রিজের কাছে আলমডাঙ্গা কসাইখানা অবস্থিত। আলমডাঙ্গায় পৌঁছে যে কোনো স্থানীয় পরিবহনে বা পায়ে হেঁটে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন

চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থিত আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে সুন্দিয়াল হোটেল, হোটেল অবকাশ, হোটেল আল-আমিন, হোটেল আল মেরাজ, অন্তরাজ আবাসিক হোটেল, প্রিন্স আবাসিক হোটেল, হোটেল সোনার বাংলা ও হোটেল সুরমা।

কোথায় খাবেন

আলমডাঙ্গা হাল্কা চা, স্ন্যাকস বা সাধারণ বাঙালি খাবার সরবরাহ করে। তবে ভালো মানের খাবারের জন্য আপনাকে চুয়াডাঙ্গা শহরে আসতে হবে। চুয়াডাঙ্গা শহরে কলেজ রোডের পাশে বেশ কিছু ভালো মানের রেস্টুরেন্ট আছে। সুযোগ থাকলে চুয়াডাঙ্গার বিখ্যাত কালিপদ মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

চুয়াডাঙ্গার অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে মেহেরুন শিশু পার্ক, দর্শনা, পুলিশ পার্ক, আটটি কবর এবং ঘোলদাড়ি শাহী মসজিদ।
ফিচার ইমেজঃ সাকিম আহমেদ

Related Post

মেহেরুন শিশু পার্ক চুয়াডাঙ্গা

মেহেরুন শিশু পার্ক চুয়াডাঙ্গা

কে আর মালিক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হাদা উপজেলার ইব্রাহীমপুর গ্রামে ৬০ বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত হয়েছে ...

শাফায়েত আল-অনিক

২ জুলাই, ২০২৪

দর্শনা চুয়াডাঙ্গা

দর্শনা চুয়াডাঙ্গা

দর্শনা চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে 21 কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প শহর। ১৮৬২ সালের ১৫ ...

শাফায়েত আল-অনিক

২৩ জুলাই, ২০২৪

ঘোলদাড়ি শাহী মসজিদ

ঘোলদাড়ি শাহী মসজিদ

মোহাম্মদ ঘোরীর শাসনামলে, ওমর শাহ নামে এক ধর্মীয় দরবেশ 1006 সালে আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ী গ্রামে ঘোলদারি শাহী মসজিদ নি ...

শাফায়েত আল-অনিক

৩১ জুলাই, ২০২৪

logo CholoZai

CholoZai is an easier hotel booking platform in Bangladesh, We are trying to making travel simple and accessible for everyone. Choose CholoZai for a hassle free hotel booking experience.

Need Help ?

We are Always here for you! Knock us on Whatsapp anytime or Call our Hotline (10AM - 10PM).