Rayer Bazar Bodhyo Bhumi Dhaka

রায়ের বাজার বোধ্যভূমি ঢাকা

Dhaka

Shafayet Al-Anik

·

২০ আগস্ট, ২০২৪

রায়ের বাজার বোধ্যভূমি ঢাকা পরিচিতি

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ যা রায়ের বাজার গণহত্যা স্মৃতি এবং শহীদ গণহত্যা স্মৃতি হিসেবেও পরিচিত। স্মৃতিসৌধটি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার রায়েরবাজার এলাকায় অবস্থিত। এটি 1971 সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধার চিহ্ন হিসাবে তার সহযোগীদের সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল যারা দেশের সেরা বুদ্ধিজীবী এবং অন্যান্যদের হত্যা করেছিল।
তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত রাইয়ের বাজার মুঘল আমলে মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। ঔপনিবেশিক আমল থেকেই বসতি শুরু হয়। লাল মাটির সহজলভ্যতা এবং নদীপথে যাতায়াতের খরচ কম হওয়ায় এ অঞ্চলের অধিকাংশ কুমার রায়েরবাজারে বসবাস করত। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, মুঘল আমলে রায়ের বাজারকে 'কুমারতলী' বলা হত।
এ রায়ের বাজারের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি জড়িয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় অনুধাবন করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশকে হতাশ করতে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে সাংবাদিক, শিক্ষক, শিল্পী, চিকিৎসক, লেখক, প্রকৌশলীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন পেশার বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ছিলেন ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, শহীদুল্লাহ কায়সার, ড.ফজলে রাব্বিসহ আরও অনেকে। এরপর বাংলার সূর্য শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করে তাদের লাশ রায়ের বাজারের ইটভাটায় ফেলে রেখেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর রায়েরবাজারের ইটভাটায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পচা লাশ দেখা যায়।
1993 সালে, বাংলাদেশ সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে, 1996 সালে স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং 1999 সালে স্থপতি ফরিদউদ্দিন আহমেদ এবং স্থপতি জামি-আল-শাফির নকশায় শেষ হয়।
রায়ের বাজার বোধ্যভূমি এলাকা ৩.৫১ একর। স্মৃতিসৌধের মূল অংশে ১৭.৬৮ মিটার উঁচু, ০.৯১ মিটার চওড়া এবং ১১৫.৮২ মিটার লম্বা একটি ভাঙা ও বাঁকা ইটের দেয়াল রয়েছে। যা সেই ইটভাটাকে বোঝায় যেখানে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের মৃতদেহ গ্রহণ করা হয়েছিল। আর ভাঙা দেয়ালের দুই প্রান্ত বুদ্ধিজীবী হত্যার দুঃখ-বেদনার গভীরতা নির্দেশ করে। দক্ষিণ-পশ্চিম দেয়ালে একটি বর্গাকার জানালা রয়েছে। জানালা দিয়ে পেছনের আকাশ দেখা যায়। আর এই জানালা আশার বার্তা নিয়ে আসে, দেয়ালে শোকের গভীরতা কমিয়ে দেয়।
বাঁকা দেয়ালের সামনে একটি স্থবির জলাধার, যেখানে কালো গ্রানাইটের একটি স্তম্ভ জল থেকে উঠে আসছে। যা তাৎপর্যপূর্ণ শোকের প্রতীক। রায়ের বাজারে গণহত্যার স্মৃতিস্থলে একটি ছোট জাদুঘর, অফিস স্পেস সহ একটি গ্রন্থাগার এবং একটি কবরস্থান নির্মাণের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে।

পরিদর্শনের সময়সূচী

রায়েরবাজার গণহত্যা স্মৃতিসৌধ প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। তবে রাতে প্রবেশ নিষেধ। আর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে প্রবেশের জন্য কোনো প্রবেশ টিকিট লাগবে না।

কিভাবে যাবেন

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে যেতে চাইলে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে ঢাকার মোহাম্মদপুরে আসুন। সেখান থেকে রিকশায় সহজেই যাওয়া যায় রায়ের বাজারের এই শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে।
ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে মোহাম্মদপুর যাওয়ার বাস সার্ভিস পেতে পারেন অথবা আপনার প্রাইভেট কার, সিএনজি নিয়ে সহজেই আসতে পারেন মুক্তিযুদ্ধের এই স্মৃতিসৌধ দেখতে।

Related Post

বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি সাভার ঢাকা

বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি সাভার ঢাকা

'বিরুলিয়া' তুরাগ নদীর তীরে একটি ছোট্ট গ্রামের নাম। ঢাকা শহরের খুব কাছের এই বিরুলিয়া গ্রামটি দশটিরও বেশি ঐতিহ্যবাহী কাঠ ...

শাফায়েত আল-অনিক

২০ আগস্ট, ২০২৪

খেলারাম ডাটা হাউস ঢাকা

খেলারাম ডাটা হাউস ঢাকা

ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের খেলারাম দাতাকে নিয়ে এ অঞ্চলে বেশ কিছু লোককাহিনী রয়েছে। জানা যায়, খেলারাম দাতা ডাকাত প্রধান ছিলে ...

শাফায়েত আল-অনিক

২৯ জুন, ২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর

জাতীয় জাদুঘর যুগে যুগে বাংলাদেশের উন্নতির সব স্মৃতি সংরক্ষণ করে চলেছে। ১৯১৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি কক্ষে ঢাকা জা ...

শাফায়েত আল-অনিক

৮ জুলাই, ২০২৪

logo CholoZai

CholoZai is an easier hotel booking platform in Bangladesh, We are trying to making travel simple and accessible for everyone. Choose CholoZai for a hassle free hotel booking experience.

Need Help ?

We are Always here for you! Knock us on Whatsapp anytime or Call our Hotline (10AM - 10PM).