Kusumba Mosque Naogaon

কুসুম্বা মসজিদ নওগাঁ

Naogaon

Shafayet Al-Anik

·

১৫ জুলাই, ২০২৪

কুসুম্বা মসজিদ নওগাঁ পরিচিতি

কুসুম্বা মসজিদ (কুসুম্বা মসজিদ) নওগাঁ জেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন যা প্রায় সাড়ে চারশ বছরের পুরনো। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ৮নং কুসুম্বা ইউনিয়নের কুসুম্বা গ্রামে কুসুম্বা মসজিদের অবস্থান। নওগাঁ থেকে মসজিদটির দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এবং মান্দা উপজেলা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার। সুলতানি আমলের সাক্ষী কুসুম্বা মসজিদ, বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে ছাপা। কুসুম্বা মসজিদকে নওগাঁ জেলার ইতিহাস ও মুসলিম স্থাপত্যের এক অসামান্য নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়। এ অঞ্চলের মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর প্রথম যুগের ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিড় জমায়।

কুসুম্বা মসজিদের ইতিহাস

কুসুম্বা মসজিদটি 1558 খ্রিস্টাব্দে আফগানী শু রাজবংশের শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের শাসনামলে সুলাইমান নামে এক ব্যক্তি তৈরি করেছিলেন। মসজিদের অভ্যন্তরে, উত্তর-পশ্চিম কোণে, সেই সময়ে বিচার পরিচালনার জন্য একটি লম্বা স্তম্ভের উপর একটি আসন দেখা যায়। প্রবেশদ্বার থেকে একটু দূরে একটি বাক্স আকৃতির কালো পাথর, যা একটি শিশুর কবর বলে বিশ্বাস করা হয়। তবে পাথরের ওপর আরবি লেখা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় এই স্মৃতিস্তম্ভটি হোসেন শাহের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে কুসুম্বা মসজিদটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মসজিদটির তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

কুসুম্বা মসজিদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

কুসুম্বা মসজিদটি 58 ​​ফুট লম্বা এবং 42 ফুট চওড়া, আয়তাকার কালো, ধূসর পাথর এবং পোড়া মাটি দিয়ে নির্মিত। গ্রামীণ শেডের আদলে তৈরি মসজিদের ছাদ উত্তর-দক্ষিণে বাঁকা। মসজিদের চারপাশের দেয়াল প্রায় ৬ ফুট পুরু। মসজিদের চার কোণায় চারটি সুন্দর অষ্টভুজাকৃতির মিনার বা বুরুজ রয়েছে। মসজিদে প্রবেশের জন্য সামনের দিকে ৩টি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি দরজা আকারে বড় এবং অন্যটি ছোট। কুসুম্বা মসজিদের মিহরাবগুলি পাথরের খোদাই দ্বারা সজ্জিত এবং মসজিদের কিবলা প্রাচীর জুড়ে গোলাপের মোটিফ খোদাই করা হয়েছে।
মসজিদের বাইরের দেয়ালেও নিপুণতার ছাপ রয়েছে। আর কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের খিলানে ফুটে উঠেছে প্রাচীন নকশার কারুকাজ। কুসুম্বা মসজিদের উত্তর-দক্ষিণ পাশে প্রায় ৭৭ বিঘা জমির ওপর বিশাল পুকুর রয়েছে। মসজিদের সামনের খোলা প্রাঙ্গণ থেকে পাথরের একটি সিঁড়ি লেকের পানিতে নেমে গেছে। প্রায় 1200 ফুট এবং 900 ফুট চওড়া হ্রদটি গ্রামবাসী এবং উপাসকদের জলের চাহিদা মেটাতে ব্যবহৃত হয়।

কিভাবে যাবেন

আপনি ঢাকা থেকে রাজশাহী যে কোন বাসে করে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে কুসুম্বা মসজিদে যেতে পারেন। ঢাকা থেকে রাজশাহীতে এসি ও নন-এসি বাসে ভাড়া পড়বে ৬৮০-১৪০০ টাকা।

খাবার এবং আবাসন ব্যবস্থা

নওগাঁয় জেলা পরিষদের একটি ডাক বাংলো রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু মানসম্মত আবাসিক হোটেল রয়েছে। নওগাঁর দেলুয়াবাড়ী বাজারে বেশ কিছু মিষ্টির দোকান ও রেস্তোরাঁয় সুলভ মূল্যে খাবার খেতে পারেন।

Related Post

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার

পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বা সোমপুর মহাবিহার নামে পরিচিত বৌদ্ধ বিহারটি একটি প্রাচীন স্থাপনা যা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। পাহাড ...

শাফায়েত আল-অনিক

২০ আগস্ট, ২০২৪

পাহাড়পুর বিহার জাদুঘর নওগাঁ

পাহাড়পুর বিহার জাদুঘর নওগাঁ

পাহাড়পুর বিহার জাদুঘরটি নওগাঁ জেলায় অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ও প্রাচীনতম পাহাড়পুর বুদ্ধ বিহারের কাছে বাংলাদেশের ...

শাফায়েত আল-অনিক

৪ আগস্ট, ২০২৪

আলতা দীঘি নওগাঁ

আলতা দীঘি নওগাঁ

নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে আলতা দীঘি অবস্থিত। ধামইরহাট থেকে গ্রামের আধা-পাকা রাস্তা ধরে ...

শাফায়েত আল-অনিক

৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

logo CholoZai

CholoZai is an easier hotel booking platform in Bangladesh, We are trying to making travel simple and accessible for everyone. Choose CholoZai for a hassle free hotel booking experience.

Need Help ?

We are Always here for you! Knock us on Whatsapp anytime or Call our Hotline (10AM - 10PM).