সুন্দরবন বিশাল এলাকা। বন বিভাগ থেকে সুন্দরবনের কিছু এলাকায় ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও বরগুনা হয়ে সুন্দরবনে যাওয়া যায়। তবে অধিকাংশ পর্যটক খুলনা ও বাগেরহাটের মংলা দিয়ে যাতায়াত করেন। খুলনা ও মংলা থেকে দেখার মতো উল্লেখযোগ্য স্থানের মধ্যে রয়েছে করমজল, হারবাড়িয়া, কচিখালী, কটকা, জামতলা, হিরণ পয়েন্ট এবং দুবলার চর।
করমজল: মংলার সবচেয়ে কাছে করমজল। এটি মূলত বন বিভাগের একটি হরিণ ও কুমির প্রজনন কেন্দ্র। বন, হরিণ, কুমির, বানর এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছের মধ্যে দিয়ে একটি কাঠের পুল ট্রেইল রয়েছে। সুন্দরবনের গভীরে পশু-পাখি দেখার সুযোগ না থাকলে দুধের স্বাদ কালো জলে মিশে যাবে।
হারবাড়িয়া: সুন্দরবনের অন্যতম পর্যটন স্থান হারবাড়িয়া। মংলা থেকে দূরত্ব প্রায় ২০ কিমি। এখানকার প্রধান আকর্ষণ বনের মধ্য দিয়ে কাঠের ট্রেইল। ট্রেইলটি সম্পূর্ণ করতে প্রায় 30 মিনিট সময় লাগে। রয়েছে পদ্ম পুকুর ও ওয়াচ টাওয়ার। ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো হারবাড়িয়া দেখা যায়। বনের ভিতরে কাঠের সেতু দিয়ে হাঁটা একজনের সাহসিকতা এবং উত্তেজনার অনুভূতি জাগ্রত করবে।
কটকা: কটকা ফরেস্ট স্টেশনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। আর সুন্দর অভয়ারণ্যটি সমুদ্রের কাছে। কটকের সেরা জিনিসগুলির মধ্যে একটি হল আপনি বন্য হরিণের পাল দেখতে পারেন। বনের ভেতরে কাঠের ট্রেইলও আছে। কেওড়া বনের পথ ধরে 15 মিনিট হাঁটার পর এক পাল হরিণ দেখা যায়।
কটক সমুদ্র সৈকত: কটক পয়েন্টের লেজ বরাবর একটি ছোট হাঁটা পথ কটক সমুদ্র সৈকতে নিয়ে যায়। এখানে বঙ্গোপসাগর দেখা যায়। কটক সমুদ্র সৈকত খুব পরিষ্কার এবং সুন্দর। এখানে, সৈকত জুড়ে লাল কাঁকড়ার শিল্পকর্ম আঁকা হয়েছে।
জামতোলা সমুদ্র সৈকত: জামতোলা কটকের কাছে। এখানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার আছে, এই টাওয়ার থেকে আপনি সুন্দরবনের কিছু সৌন্দর্যের এক ঝলক দেখতে পারবেন। আর ভাগ্য ভালো থাকলে এখান থেকে হরিণ বা বাঘ দেখতে পারবেন। জামতলা ঘাট থেকে প্রায় ৩ কিমি হেঁটে জামতলা সমুদ্র সৈকত দেখা যায়।
মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত: মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতের একটি অংশ এখনও অনাবিষ্কৃত বলে মনে করা হয়। এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। মান্দারবাড়ি যেতে হলে সাতক্ষীরা হয়ে সুন্দরবন যেতে হবে।
হিরণ পয়েন্ট: হিরণ পয়েন্টের সুন্দর কাঠের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় হরিণ, বানর, গুইসাপ এবং কুমির দেখা যায়। এখানেও মাঝে মাঝে বেঙ্গল টাইগার দেখা যায়।
দুবলার চর: দুবলার চর সুন্দরবন এলাকার একটি ছোট চর। দুবলার চরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীটি বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। হিন্দুদের পবিত্র স্নান, রাসমেলা এবং শুটকির জন্য বিখ্যাত। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি- এই পাঁচ মাসে প্রায় ১০ হাজার বন্দি সেখানে অস্থায়ী বসতি স্থাপন করেছেন। মাছ ধরার পাশাপাশি শুকিয়ে যায়।